আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:
বিআরটিসি’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে সাইবার আদালতে মামলা। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ালো বিআরটিসি। এডভোকেট সোহানা তাহমিনার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা উচ্চ আদালতে। মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে ট্রাক প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করবেন এড, সোহানা তাহমিনা। লৌহজংয়ে নানা আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত। মুন্সীগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী পালিত হল মহান বিজয় দিবস। লৌহজং উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বিজয় দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন। লৌহজংয়ে আদালতের রায় অমান্য করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, মানবেতর জীবন-যাপন ভুক্তভোগী পরিবার। লৌহজংয়ে ভাওতা দিয়ে লবণের বিনিময়ে সর্বস্ব লুট! লৌহজংয়ে ৫ জয়িতার সম্মাননা লাভ।
||
  • Update Time : আগস্ট, ১৭, ২০২৩, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

দুদকের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে কোটি টাকা হাতিয়েছেন তারা!

এম রাসেল সরকার: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে নির্বাচিত জন প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ। গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খন্দকার নুরুন্নবী।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. সেলিম ওরফে তানভীর ইসলাম ওরফে শফিকুর রহমান (৩৯), মো. সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮), আব্দুল হাই সোহাগ (৩৮) এবং মো. আজমীর হোসেন (৩৭)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল, ১০টি সিম, বাংলা টিভি ৭১ এর কর্ডলেস মাউথ পিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের ৭টি ভুয়া আইডি কার্ড, দুদক কর্তৃক বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের ১২টি প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা তিনটি নোটবুক জব্দ করা হয়।

খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, দুদকের নামে ঘুষ গ্রহণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম রমনা থানায় গত ১৩ আগস্ট মামলা করেন। এর পরদিন যাত্রাবাড়ী, মুগদা ও এয়ারপোর্ট এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দুদকের বিভিন্ন পদ-মর্যাদার কর্মকর্তাদের নামে অভিযোগ নিষ্পত্তির আশ্বাসে ঘুষ হিসেবে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

খন্দকার নুরুন্নবী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায় কোনো ব্যক্তি হঠাৎ করে সম্পদশালী হলে তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে দুদক বরাবর ভূয়া অভিযোগ তৈরি করে, অভিযোগ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি ও আদায় করে ভূয়া তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে তাদেরকে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠাতো।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে এক আসামি এক সময় রড মিস্ত্রির কাজ করে পরবর্তীতে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ছিল। বর্তমানে দুদকের প্রধান কার্যালয়, বিভিন্ন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নামে বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী, হিসাব রক্ষক, সার্ভেয়ারদেরকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার কাজ।

আসামি সোহাগ পাটোয়ারী এক সময় ম্যানেজমেন্ট এবং ডিজে পার্টিতে কাজ করতো। সেই থেকে বিভিন্ন মেয়ে এবং দালালদের সাথে তার নানা রকম সখ্যতা গড়ে ওঠে। দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের নামে গঠন করা অভিযোগ, অভিযোগ থেকে দায় মুক্তি সংক্রান্ত চিঠি ডাউনলোড করে সে পাঠাতো প্রতারক সেলিমের কাছে। তাছাড়া টার্গেট করা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিদের নামে দুর্নীতির অভিযোগের চিঠি বানিয়েও পাঠাতো। সেলিম এভাবে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বার গ্রেপ্তার প্রতারক আব্দুল হাই ও আজমির হোসেনকে দিয়ে সংগ্রহ করাতো। তারপর দুদকের কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপ-পরিচালকদের নাম ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নিতো।

প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করতে তারা ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো। এক্ষেত্রে তারা দুদক কার্যালয়ের সামনে অথবা সেগুনবাগিচাস্হ নাট্য মঞ্চ এলাকার আশপাশে টার্গেট ব্যক্তিদেরকে আসতে বলে ক্যাশ অথবা নগদ ফাইন্যান্সিয়াল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা গুলো হাতিয়ে নিতো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা লাখ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে স্বীকার করেছে।

এভাবে তারা এক বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মাদকাসক্ত এবং অসামাজিক কাজে অভ্যস্ত আসামিরা মুহূর্তেই টাকা খরচ করে নতুন প্রতারণায় হাত দিতো। আসামিরা বর্তমানে রিমান্ডে আছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, এখন পর্যন্ত এই চক্রের সঙ্গে দুদকের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও পড়ুন