গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের পাটিকেলবাড়ি গ্রামে পরকিয়া করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক যুবককে উদ্ধার করতে ইউনিয়ন পরিষদ ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার রাতআনুমানিক পোনে ৯টায় সাহাপুর ইউনিয়নের পাটিকেলবাড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে পাটিকেলবাড়ি গ্রামে লিটু হালদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া সম্পা মন্ডলের সাথে পরকিয়া করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয় টুঠামান্দ্রা গ্রামের সুনিল হীরার ছেলে সুদিপ হীরা। গণধোলাই হাত থেকে বাচাঁনোর জন্য সুদিপ হীরাকে ইউনিয়ন পরিষদে সচিবের রুমে রাখা হয়। পরে সুদীপ হীরার পক্ষের লোকজন ইউনিয় পরিষদ ভাংচুর করে সুদিপকে ছিনিয়ে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাম পুলিশ কালিপদ বিশ্বাস বলেন, গতকাল রাতে পাটিকেলবাড়ি গ্রামের লিটু হালদারের বাড়ি থেকে ভাড়াটিয়া সম্পা মন্ডলের ঘর হতে টুঠামান্দ্রা গ্রামের সুনিল হীরার ছেলে সুদিপ হীরাকে পরকিয়া করার সময় হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। গণধোলাইয়ের হাত থেকে বাচাঁনোর জন্য পাটিকেলবাড়ি গ্রামের নিরাঞ্জন বালার ছেলে অর্নিবান বালা তাকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের রুমে রাখে। পরে সুদিপ হীরার পক্ষে টুঠামান্দ্রা গ্রামের দয়াল হীরার ছেলে অনিমেষ হীরা, শংকর হীরা ও অসিম হীরা সহ আরও ১৫ থেকে ২০ জন্য এসে সচিবের রুমের দরজা ভেংগে কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং সুদিপকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সুদিপকে যে অনির্বান বাঁচানোর জন্য পরিষদের সচিবের রুমে নিরাপদে রাখে সেই অর্নিবানকে মারপিট করে মারাক্তক জখম করে সুদিপের লোকজন। এ ঘটনার পরে বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে চেয়ারম্যানকে খবর দিলে তিনি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
সাহাপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয় সরকার অনাদি বলেন, গতকাল অফিস শেষে আমি জন্মাঅষ্টমী একটি অনুষ্ঠানে যাই। এর মধ্যে পরিষদের থেকে ফোন আসে, পরিষদে ভাংচুর হয়েছে। পরে আমি পরিষদে আসি এবং জানতে পারি সুদিপ হীরা নামে একটি ছেলে পরকিয়া করতে গিয়ে,ওই এলাকার কিছু ছেলেপেলে তাকে ধরে মারপিট করে। এক পর্যায় অর্নিবান বালা নামে একটি ছেলে তাকে জনগনের রোষানল থেকে বাঁচানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে। ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসার পরে, গ্রাম পুলিশ কালিপদ বিশ্বাস বলে এত রাতে তুমি আনছো, এখন তো চেয়ারম্যান নাই তোমরা এখানে রেখ না। অর্নিবান বললো ওকে রুমে না রাখা হলে গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। তুমি ওকে ঢুকতে দাও। এরপরে তাকে রুমে ঢুকতে দেয় এবং সুদিপের সাথে অর্নিবান রুমে ঢুকে।
তিনি আরও বলেন, কিছু সময় পরে সুদিপ হীরার ভাইয়েরা, সাবেক চেয়ারম্যান সুবোধ হীরার বংশের লোকজন লাঠিলোটা নিয়ে আসে। গ্রাম পুলিশ কালিপদ বিশ্বাস বাধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেংগে আমার পরিষদের সেক্রেটারীর রুমে ভিতরে ঢুকে, রুমে ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাংচুর করে। অর্নিবান বালা যে সুদিপ কে জনগনের লোষানল থেকে বাঁচালো তাকেও মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। এটা জানার পরে আমি পুলিশ কে খবর দেই এবং আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তারদের সাথে কথা বলে আমি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছি।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমার পরিষদ ভাংচুর করার পরে বাজারে রতন হীরার ঔষদের দোকান ভাংচুর করে নগদ ৩ লক্ষ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল টুলপাট করে।
এব্যাপারে অনিমেষ হীরা অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, সুদিপ হীরাকে ওরা মারপিট করে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখে। পারে আবার রতন নামে একজন বলে কি’রকম মারছিস, মার হয়নি আরও মারতে হবে। এই বলে তারা নিজেরা পরিষদ ভাংচুর করে সুদিপকে আবার মারপিট করে। সুদিপকে বাঁচানোর জন্য ওখান থেকে তাকে নিয়ে এসেছি এবং হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।
গোপালগঞ্জ সদর থানায় ওসি শেখ মো: নাসিরউদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান এসেছিল মৌখিকভাবে জানিয়েছে। লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply